March 23, 2023, 10:18 am
খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুর জেলার গংগাচড়া থানার খলেয়া ঠাকুরপাড়া এলাকায় মোঃ আব্দুল্লাহ গংদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বায়নাকৃত জমির মূল্য পরিশোধ না করেই জমি – গোডাউন দখল , হাঁস মুরগি ও গরুর সেট ভাঙচুর , গোডাউনে থাকা মালামাল লুটপাট , গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে মারপিট , অর্থ লুট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে এজাহার দাখিল করেছে ভুক্তভোগী রতন চক্রবর্তী ।
রতন চক্রবর্তী জানান , আব্দুল্লাহর সাথে গত ২৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে আমার ৫২ শতক জমির বিক্রির বায়নামা দলিল (১৭৯০১) করা হয় । কিন্তু পরপর তিন টি তারিখ নিয়েও সে বাকি টাকা পরিষদ করতে পারেনি । বায়নামা দলিলের অঙ্গীকার করা শর্ত অনুযায়ী আমি তার থেকে গ্রহণ করা টাকা ফেরত দিতে গেলে উল্টো আমাকে হুমিকি ও ভয়ভীতি দেখায় । আমাকে মরার জন্য পুরুস্কার ঘোষণা করে । এ ব্যাপারে তাকে নিয়মানুযায়ী একটি লিগ্যাল নোটিশ ও পাঠাই।
রতন আরও জানায় , ১৭ ও ১৮ অক্টোবর ২২ তারিখে আবদুল্লাহ গংয়ের শতাধিক গুণ্ডা বাহিনী বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমার মাতৃ ছায়া ট্রেডার্স এর স্থাপনকৃত সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে , জমি ও গোডাউন দখল করে। এসময় তারা জমিতে থাকা গাছগাছালি, মুরগির খামার, হাঁসের খামার, গরুর সেট ভাঙচুর করে অন্তত ১১ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে । আমার বড় ভাইয়ের ব্যবহৃত ওই গোডাউনে থাকা ধান, পাট, তামাক, রডের বান্ডিল, সিমেন্ট (যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১৩ লক্ষ টাকা ট্রাকযোগে লুটতরাজ করে।
রতন চক্রবর্তীর স্ত্রী কাকলি রানী বলেন , এতসব কিছুর ক্ষতি করেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। ১৯ অক্টোবর ২২ তারিখে আব্দুল্লাহর নির্দেশে তুহিন মিয়া, সোনা মহন্ত সহ ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী জোরপূর্বক আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে । ওই সময় বাসায় কেউ না থাকায় তারা আমার গলায় চাকু ধরে ডয়ারের চাবি নেয়, এরপর ১০ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায় । গোয়ালঘরে থাকা ৩ টি বিদেশি শাহীওয়াল জাতের গরু ও ২টি দেশী গরু নছিমনে করে নিয়ে যায়, যার বাজার মূল্য আনুমানিক সাড়ে আট লাখ টাকা। গরু নিয়ে যাওয়ার সময় আমার প্রতিবেশীরা মোবাইল ফোনে গরু নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রেখেছেন । আমার স্বামী থানায় অভিযোগ দিলেও অজানা কারণে আমাদের সাথে অবিচারের কোন মামলা এখন পর্যন্ত রেকর্ড হয়নি।
ঠাকুরপাড়া এলাকার জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন , গরু নিয়ে যাওয়ার দিন আমি দোকানে কাজ করছিলাম ।হঠাৎ জানতে পারে ছুটে যাই দেখতে । দেখি গেট বন্ধ করে আব্দুল্লাহর লোকজন নছিমনে গরু তুলে নিয়ে যায় । আমিও ভিডিও করে রেখেছি ।
খলেয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল মাজেদ বলেন, শুধু মাত্র বায়না করেই কেউ জমি দখল, গাছগাছালি কাটা, ক্ষতিসাধন করতে পারে না । এটা অন্যায় । জমিজমা নিয়ে সমস্যা হলে বসে সমাধান করা যায় কিন্তু বসাবসি না করে গরু বের করে নিয়ে যাওয়াটা তারা ঠিক করেনি । পরে অবশ্য আমি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোতালেব ভাইসহ গরু গুলো উদ্ধার করে আবার আগের জায়গায় দিয়ে এসেছি ।
এ ব্যাপারে গংগাচড়া থানার তদন্তকারী অফিসার এস আই দীনেশের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আসলে গরু গুলো বের করা তারা অন্যায় করেছে । বর্তমানে রতন চক্রবর্তীর দেওয়া এজহারের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে । আমরা পূর্ন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করব ।