January 15, 2025, 8:37 am
হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের গুরাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিতাস গ্যাসের প্রায় দুই কিলোমিটার পাইপ লাইনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন তিতাস কতর্ৃপক্ষ। সোমবার (১৭ অক্টোবর ২০২২ইং) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।
জানা গেছে, আশুলিয়া এলাকাজুড়ে তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এক স্থানে ৭-৮ বার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একদিনের অভিযান করলে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। এক মাসে ৪ দিনে খরচ হয় ৪লক্ষাধিক টাকা ও এক বছরে প্রায় ৫০টি অভিযানে প্রায় ৫০-৬০ লক্ষ টকা খরচ হয় সরকারের।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, ভাদাইল, গাজীরচট, ইউনিক, শিমুলতলা, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, গফুর মন্ডল স্কুলের আশপাশের এলাকা, চিত্রশাইল, ইউসুফ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এই চক্রের সাথে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও কিছু পুলিশ সদস্য এবং কিছু কথিত সাংবাদিকসহ অনেকেই জড়িত রয়েছে বলে বৈধ গ্রাহকরা ও এলাকাবাসী জানায়। তিতাস গ্যাসের মূল পাইপ লাইন থেকে দুই ই ি পাইপ দিয়ে হোটেল, কারখানা ও বাসা বাড়িতে এসব অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে থাকে বলে অনেকেই জানান।
জানা গেছে, এর আগে ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় প্রায় ৫ শতাধিক বাসা বাড়ির গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিতাস কতর্ৃপক্ষ এবং ভ্রাম্যমান আদালতে কিছু অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ ২০২২ইং সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পাইপ লাইনের ৮শতাধিক বাসা বাড়ির গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিতাস গ্যাস কতর্ৃপক্ষ। গত (২০ জুলাই ২০২২ইং) আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে বলে সূত্র জানায়। এখনও অভিযান চলমান থাকলেও অবৈধ সংযোগ দেয়া বন্ধ নেই আর এসব অবৈধ সংযোগ দেওয়ার সাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে বলে সূত্র জানায়।
সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ (সায়েম) গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিটি অভিযানে বিপুল পরিমান পাইপ, রাইজার ও চুলা জব্দ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় একটি অবৈধ দালাল চক্র তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন থেকে ২-৩ ই ি পাইপ দিয়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে ফিটিংস ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অবৈধ সংযোগ প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, অভিযানে অনেক বাসা বাড়িতে নেয়া অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও এক দুইদিন পর আবারও সেই এলাকায় অবৈধভাবে সংযোগ দেয় দালাল চক্র। এসব অবৈধ সংযোগের পাইপলাইন ও রাইজারগুলো জব্দ করা হচ্ছে। একাধিকবার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও বারবার কিছু বাড়ির মালিক ও দালালরা অবৈধ সংযোগ নিয়ে সরকারি গ্যাস ব্যবহার করে, এর কারণে ভ্রাম্যমান আদালতে এর আগে ৬জনকে জরিমানা করেছেন।উক্ত ব্যাপারে এ পর্যন্ত আশুলিয়া থানায় প্রায় ৫০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে তিনি জানান। এসব অভিযানে তিতাস গ্যাসের সাভার জোনাল অফিসের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমানসহ ৫-৬জন কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
সোমবার আশুলিয়ার গুরাট এলাকার অভিযানের সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিলো। এ সময় আশুলিয়া থানার (এ এসআই) রবিউল ইসলাম বলেন, আজকের অভিযানে আশুলিয়া থানা পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ডিউটি পালন করেছেন, সেই সাথে কিছু নারী পুলিশ সদস্যও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আশুলিয়ার কাঠগড়া, গুরাটসহ বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়িতে অবৈধ ভাবে তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে অবৈধ সংযোগ নেয়ার অপরাধে বাড়ির ম্যানেজারসহ বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়। তিনি আরও বলেন, এরপর যদি কেউ এরকম অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।