September 14, 2024, 11:44 pm
হেলাল শেখঃ পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বললে বা সংবাদ প্রকাশ করায় সেই সাংবাদিকদের নামে বিভিন্নভাবে মামলা করা হয়। সাংবাদিকরাতো কোনো চোর ডাকাত নয়, কেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় জাতি জানতে চায়।
সারাদেশেই নিজেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শক্রতা সুষ্টি করছে কিছু সাংবাদিক ও দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ, সেই সাথে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা, আশুলিয়া থানা, মিরপুর থানা, বরিশাল ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানাসহ সারাদেশে প্রায় অনেক থানায় সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বলা হয় জাতির বিবেক কিন্তু তারা যদি অপরাধমূলক কর্মকান্ড করেন তাহলে সাধারণ মানুষ সেবা পাবে কোথায়? অর্থ ও স্বার্থের জন্য মানুষ যদি অমানুষের পরিচয় দেন এটা খুবই লজ্জা ও দুঃখজনক।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কাজ করা, জনগণের প্রকৃত বন্ধু সাংবাদিকরা। কর্মরত অবস্থায় ডিউটির পর ডিউটি করতে হয় সাংবাদিকদের, কিন্তু তাদের মনের দুঃখ কেউ বুঝতে চায়না। সাংবাদিকদের পেশা যেন ধর্মকর্ম মানুষের সেবা করাই তাদের একমাত্র কাজ। যারা কাজ করেন তাদের ভুল হতেই পারে কিন্তু ছোট একটা ভুল করলেই বড় ধরণের হামলা, মামলার শিকার হতে হয় সাংবাদিকরা, থানায় ডেকে নিয়ে বা রাস্তা থেকে ধরে নিয়েই বিভিন্ন মামলা দেয়া হয় সাংবাদিকদের নামে, এটা জাতির জন্য কতটা লজ্জাজনক?।
বাংলাদেশে প্রায় ১৮ কোটি জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন পুলিশ বাহিনী ও সাংবাদিকরা। সরকার পুলিশকে বেতন ভাতা দিলেও সাংবাদিকরা পাচ্ছেন না সরকারি কোনো ভাতা। ভালো কাজ করলে বলা হয় এটা তাদের দায়িত্ব। সামান্যতম ভুল করলে তাদেরকে বড় গালাগালি দেওয়া হয়। সব পুলিশ খারাপ না, কিছু পুলিশ সদস্য খারাপ তাই পুলিশের বদনাম হয়। মানবিক পুলিশ ও সাংবাদিক তাদের ঘর থেকে বাহিরে বের হলে বা ডিউটিতে গেলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অনেক চিন্তায় থাকেন যে, কখন যেন কোন হামলার শিকার হয় তারা। সাংবাদিক ও পুলিশকে বলা হয় ঘুষখোর, চাঁদাবাজ কিন্তু করোনাকালীন সময়ে যখন বাসা বাড়িতে ঘুমিয়েছেন জনগণ-তখন পুলিশ ও সাংবাদিক এবং ডাক্তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করেছেন। যুগ যুগ ধরে সেবা সহযোগিতা করে আসছেন যারা, তারাই জনগণের প্রকৃত বন্ধু। সব পুলিশ বা সাংবাদিক বা ডাক্তার খারাপ না।
বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব যে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গী, খুনী, ধর্ষণকারী, অপহরণকারীদেরকে গ্রেফতার করেন এবং ভিকটিম উদ্ধার করাসহ অনেক কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন। বিশেষ করে কিছু লোকজন অভিমত প্রকাশ করেন যে, পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট হলেও সেই অর্থে তুলনামূলক ভাবে সেবার মান বাড়ছে না। সূত্রমতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মানয়ীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করাসহ পাশাপাশি বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের সকল থানায় সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে,এতে যেমন প্রশংসা বাড়ছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের। তবে কিছু থানা পুলিশের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে পুলিশ বাহিনীর বদনামও হচ্ছে, কিন্তু এই দায় নিবে না মানবিক পুলিশ সদস্যরা। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা ধুলাবালির মধ্যে প্রতিদিন অনেক কষ্টের মধ্যে ডিউটি করেন, তাদের সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। দেশের থানা পুলিশ কর্তৃক আটক হওয়া ব্যক্তিদের হাজত থেকে কারাগারে থাকা নানারকম সমস্যা হয়ে থাকে, তারপরও মানুষ সঠিক পথে চলে না এটা দুঃখজনক ব্যাপার। ঢাকার আশুলিয়া থানায় জিডি ও অভিযোগের তদন্তই করেন না কিছু পুলিশ অফিসার এমন অনেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। কিছু পুলিশ সদস্যদের দাবি-বেতন বাড়ার সাথে সেবার মান বাড়ছে, আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে পুলিশ বাহিনীর সেবার মান। পুলিশের সেবার মান আরও বাড়বে ও স্বপ্ন একদিন পূর্ণ হবে। তবে পুলিশ ও জনগণের মানুষিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। সূত্র জানায়, জরাজীর্ণ থানাগুলোতে অনেক জায়গায় নতুন ভবন করেছে সরকার। এদিকে বাংলাদেশের পুলিশের নতুন প্রায় ১৫টির মতো ইউনিট গঠিত হয়েছে। কিছু পুলিশ সদস্যের ভুলের কারণে পুরো পুলিশ বাহিনীর দোষ দেয়া হয় এটা ঠিক নয়। পুলিশ সদস্যদের দাবি-বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন তারা, তবে চট্রগ্রামের মেজর সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি করেন ওসি প্রদীপ এমন একটি সংবাদ শিরোনাম প্রকাশ হয়েছে শীর্ষ জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে। এরপর থেকে পুলিশ বাহিনীর অনেক বদনাম হয়। তবে তাকে র্যাব বাহিনী আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর সিলেটে ডাক্তারের চেম্বারে কর্মচারি রায়হানকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠে। এই হত্যার ঘটনায় সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তরুণ (এসআই) আকবর ভুঁইয়াকে আটক করা হয়। গত ৯ নভেম্বর ২০২০ইং সকালে রাজধানীর আদাবর মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালের কর্মচারিদের গণপিটিুনিতে এ এসপি আনিসুল করিম হত্যার ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনা কেউ আশা করেনি বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন।
রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের থানায় পুলিশের তেমন কোনো সমস্যা না থাকায় মফস্বল এলাকা থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় আসার জন্য পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করে থাকেন। এর অনেক কারণও রয়েছে। মফস্বল এলাকায় পুলিশ সদস্যদের নানারকম সমস্যা, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। পুলিশের থাকা খাওয়ার সমস্যা। অনেক সময় জরুরি কাজে গাড়ি না পাওয়াসহ নানারকম সমস্যা রয়েছে পুলিশের। বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যেদের অনেক কষ্ট করে ডিউটি করতে হয়, তাদের অনেকেই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এমন অনেক তথ্য রয়েছে। সুত্রে জানা গেছে, অনেক ইউনিটে চাহিদার চেয়ে অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে দৈনন্দিন কাজ চালানো হচ্ছে পুলিশ বাহিনীতে। বেশিরভাগ ইউনিটি ও থানার নিজস্ব কোনো ভবন নেই, আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাড়িতে চলছে পুলিশের কার্যক্রম। অনেক সময় জরুরি অভিযান পরিচালনার জন্য গাড়ি পাওয়া যায় না। দুঃখজনক বিষয়ঃ সাধারণ মানুষ অনেকেই বলেন, ডাকঢোল পিটিয়ে রং বে-রঙের বেলুন উড়িয়ে পুলিশ বাহিনীতে নতুন নতুন ইউনিটির যাত্রা শুরু হয়, কিন্তু পুলিশের সেবার মান বাড়ছে না কেন? অনেক পুলিশ সদস্য অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন এর কারণও রয়েছে পারিবারিক সমস্যা। সূত্র জানায়, রাজধানী ছাড়াও যেমনঃ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা ভাড়া বাড়িতে চলছে পুলিশের কার্যক্রম। এই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও তদন্ত ওসিসহ ৪০ জনের মত অফিসার রয়েছেন। দেখা যায়, বেশিরভাগ পুলিশ অফিসারগণ ভাড়া গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। ১০-১২ বছর আগের পুলিশ আর বর্তমান সময়ের পুলিশ একরকম নয়। সরকার যেমন পুলিশের বেতন বৃদ্ধি করেছে,তেমনি পুলিশের কষ্টও বাড়ছে। এদিকে ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য জানান, পুলিশ সদস্য ভালো কাজ করলে পাবলিক বলে এটা পুলিশের দায়িত্ব কিন্তু পুলিশ সদস্য ছোট কোনো ভুল করলে তাদেরকে অনেক সময় বড় ধরণের শাস্তি দেয়া হয়, এমন কি চাকরি চলে যায়।
বাংলাদেশের “প্রশাসনিক কাঠামো” ৬টি থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৮টি বিভাগ ও ৬৪ জেলা এখন। ৬৪ জেলায় ৮৬,৬০৮টি গ্রাম। ১৯৭১ সালে মাত্র ৭কোটি জনগণ ছিলো, যা বর্তমানে প্রায় ১৮কোটির মত জনগণ হয়েছে। মানুষ বাড়ছে, ঘর বাড়ি বাড়ছে, ইটভাটা বাড়ছে, ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট বাড়ছে, পুলিশ সদস্যও বাড়ছে, কিন্তু সেই অর্থে কি সেবার মান বাড়ছে?। পুলিশ বিভাগের জন্য আলাদা মেডিকেল ইউনিটি গঠিত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আসাদুজ্জামান খান কামাল গত ৩ অক্টোবর ২০১৯ইং সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে “বিএসআরএফ সংলাপ” অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে সরকার গত মেয়াদে ৮০ হাজার পুলিশের জনবল বৃদ্ধি পেয়েছে। জরাজীর্ণ থানাগুলোতে নতুন ভবন করা হচ্ছে। পুলিশের নতুন ১৫টি ইউনিট গঠিত হয়েছে। আমরা হেলিকপ্টার সংযোজন করতে যাচ্ছি, তার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছি। (পিবিআই), এ ছাড়া দেশের শিল্প এলাকার নিরাপত্তা জোরদার ও শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ইন্ডাষ্টিয়াল পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ট্যুরিষ্ট পুলিশ গঠন করা হয়। এ ছাড়াও কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট নামে নতুন আরও একটি ইউনিট গঠন হয়। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি-পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ বিভাগ ও রংপুর রেঞ্জে রিজাভ ফোর্স (আর আর এফ) এবং পাবনা জেলার আতাইকুলা ও আমিনপুর থানাসহ প্রায় ২৯টি নতুন থানা এবং প্রায় ৪৭টি তদন্ত কেন্দ্র নতুন হয়েছে। বর্তমানে অনেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার) পিপিএম (বার) দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মানবিক পুলিশের প্রতি মানুষের বেড়েছে সম্মান। মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য এ কথার সত্যতা আছে কত % আমাদের জানা আছে কি?।