March 29, 2024, 12:39 am
হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়েও তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এলাকাজুড়ে তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। জানা গেছে, এক স্থানে ৭-৮ বারও অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, একদিন অভিযান করলে ১ লক্ষাধিক টাকা খরচ হলে ৮ দিনে খরচ হয় ৮লক্ষাধিক টাকা কিন্তু সরকারের লাভ কি হচ্ছে?।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, ভাদাইল, গাজীরচট, ইউনিক, শিমুলতলা, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, চিত্রশাইল, ইউসুফ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এই দালাল চক্রের সাথে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও কিছু পুলিশ সদস্য ও কিছু কথিত সাংবাদিকসহ অনেকেই জড়িত রয়েছে বলে বৈধ গ্রাহকরা জানায়। দালালরা তিতাস গ্যাসের মূল পাইপ লাইন থেকে দুই ইি পাইপ দিয়ে হোটেল, কারখানা ও বাসা বাড়িতে এসব অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে থাকে বলে অনেকেই জানায়।
ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া পালোয়ান পাড়া এলাকায় ৫ শতাধিক বাসা বাড়িতে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং ভ্রাম্যমান আদালতে একটি বাড়ির ম্যানেজারসহ ৬জনকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করায় সেই বাড়িটিতে ১ বছর ধরে আর গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দেয়ার সাহস করেনি। এরকম অভিযান করলে পুরোপুরিভাবে অবৈধ সংযোগ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন মহল। গত ১৫ মার্চ ২০২২ইং সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পাইপ লাইনের ৮ শতাধিক বাসা বাড়ির গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গত (২০ জুলাই ২০২২ইং) আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে বলে সূত্র জানায়। এখনও অভিযান চলমান থাকলেও অবৈধ সংযোগ দেয়া বন্ধ নেই আর এসব অবৈধ সংযোগ দেওয়ার সাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে।
সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম গণমাধ্যমকে বলেন, এর আগের অভিযানে বিপুল পরিমান পাইপ, রাইজার ও চুলা জব্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় একটি অবৈধ দালাল চক্র তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন থেকে ২-৩ ইি পাইপ দিয়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে ফিটিংস ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অবৈধ সংযোগ প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, অভিযানে অনেক বাসা বাড়িতে নেয়া অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। এসব অবৈধ সংযোগের পাইপলাইন ও রাইজারগুলো জব্দ করা হয়েছে। একাধিকবার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও বারবার কিছু বাড়ির মালিক ও দালালরা অবৈধ সংযোগ নিয়ে সরকারি গ্যাস ব্যবহার করে, এর কারণে ভ্রাম্যমান আদালতে এর আগে ৬জনকে জরিমানা করেছেন। উক্ত ব্যাপারে এ পর্যন্ত আশুলিয়া থানায় ৪৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে তিনি জানান। এসব অভিযানে তিতাস গ্যাসের সাভার জোনাল অফিসের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমানসহ ৫-৬জন কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এ বিষয়ে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন যে, গ্যাস অফিসের কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী এসব অবৈধ সংযোগ দেয়ার সাথে জড়িত বলেই এমনটি হচ্ছে। গত এক বছরের বেশি গ্যাসের অভিযানের মামলা করা হয়নি তাহলে অভিযান চালিয়ে সরকারি অর্থ নষ্ট করার মানে কি বলে অভিমত প্রকাশ করেন অনেকেই।
আশুলিয়া সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার মোঃ লাল চাঁন এর বাড়িতে অবৈধ ভাবে তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে অবৈধ সংযোগ নেয়ার অপরাধে বাড়ির ম্যানেজার মোঃ শারাফাত আলীকে ১০ হাজার টাকা ও ৫ জন ভাড়াটিয়াকে ৭ হাজার টাকাসহ মোট ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, এরপর যদি কেউ এরকম অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।