April 19, 2024, 4:37 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
খরায় পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন ; বৃষ্টির অভাবে অনাবাদি আমন ক্ষেত

খরায় পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন ; বৃষ্টির অভাবে অনাবাদি আমন ক্ষেত

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
বর্ষার ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন ক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাইকগাছার কৃষকরা। বর্ষাকাল শেষ হয়ে গেলেও, আমন চাষের উপযোগী বৃস্টি হচ্ছে না। আর আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক জমিতে এখনো আমন চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি। বর্ষার মৌসুমেও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নিরুপায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন দিয়ে পুকুর-বিল থেকে পানি দিয়ে আমন ধানের চারা অনেক কষ্টে রোপণ করেছিলেন। তখন ধারণা করেছিলেন বৃষ্টি হবে। সেচ দিয়ে যেসব জমিতে চারা রোপণ করেছে এখন সেসব জমিতে পানি সেচ দিয়ে চারা বাচিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক। গত বছর আগস্টে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত এর এক-চতুর্থাংশও হয়নি। এ কারণে সেচ দিয়ে আমন চাষ করতে অধিক খরচ পড়ছে কৃষকদের। পানির অভাবে আমন আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষক।
পাইকগাছা উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, আমন চারা রোপণের সময় ফুরিয়ে এলেও পানির অভাবে চারা লাগাতে পারেনি অধিকাংশ কৃষক। অনেকে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করলেও পানির অভাবে রোপণকৃত চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে, চারা মরে যাচ্ছে। কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। বীজতলায় চারার বয়স বাড়ছে কিন্ত বৃষ্টির অভাবে জমি চাষ করতে পারছেন না । যে সকল কৃষকরা সেচ দিয়ে জমি চাষ করে চারা রোপণ করেছিলেন, এখন তাঁদের প্রতি সপ্তাহে সেচ দিয়ে চারা বাচিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ কারণে বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এবছর ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। বীজতলার জন্য কৃষক বীজধান ক্রয় করেছে তবে পানির অভাবে জমি আবাদ করতে পারেনি। পাইকগাছা গদাইপুরের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, বীজ ধান কিনেছে, বৃস্টির অভাবে বীজতলা করতে পারেনি। সময় পার হয়ে যাচ্ছে আমন চাষের। গত বছর এসময় আমন ধানের চারা লাগানো শেষ হয়েছিল আর এ বছর শুরু করতে পারেনি বৃস্টির অভাবে। রাড়ুলীর কৃষ্ণপদ রায়, সবুর, করিমসহ কয়েকজন কৃষক জানান, বৃস্টির অভাবে জমিতে আমন চাষ শুরু করতে পারিনি। হঠাৎ করে একটু বৃষ্টির দেখা দিলেও তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে জমি ভিজছে না। অন্যদিকে চারার বয়স বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে চারা বাচিয়ে রাখতে হচ্ছে। এতে চিন্তার শেষ নেই। বিরাশির কৃষক সবুর জানান,চাষের সময় চলে যাচ্ছে তাই সেচ দিয়ে চারা রোপন করতে বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। তারপর বন্যা ও খরার ঝুঁকি তো আছেই। কৃষি অফিস ও কৃষকরা ধারণা করছে, কয়েক দিনের মধ্যে বৃস্টি না হলে উচু জমিতে এবছর আর আমন চাষ করা সম্ভাব হবে না। অনাবাদি থেকে যাবে জমি। তবে মাছ চাষের লীজ ঘেরে নাবী জাতের আমনের চারা লাগানো যাবে।উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমনের আবাদ হয় বর্ষাকালে। বৃস্টি নির্ভর আমনের চাষাবাদ। কমপক্ষে ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রয়োজন হয় আমনের চারা রোপণ করতে। কিন্তু গত এক মাসে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৫০ মিলিমিটারের মতো। আর সেই কারণে অনেক জমি পতিত আছে। বৃষ্টির সময় এখনও রয়েছে। তবে কৃষকদের জমিতে সেচ দিয়ে ধান রোপণ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে সেচ দিয়ে চাষ করতে কৃষকদের একটু খরচ বাড়বে। বৃষ্টি হলে তাদের জন্য কাজটি অনেক সহজ হতো। আর অনাবৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় বীজতলা নষ্ট হয়েছে। তাই কৃষকদের নাবী জাতের বীজতলা তৈরি করতে বলা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মীরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। বৃষ্টি হলে এ অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে।

ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা,খুলনা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD