April 19, 2024, 4:22 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
বৃষ্টি উপেক্ষা করে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ীতে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন স্থানে বাঁধ নির্মানের জন্য কয়েক হাজার এলাকাবাসির মানববন্ধন

বৃষ্টি উপেক্ষা করে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ীতে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন স্থানে বাঁধ নির্মানের জন্য কয়েক হাজার এলাকাবাসির মানববন্ধন

রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর উপজেলার রাজাবাড়ীতে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানগরী সড়কের দু পার্শ্বে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে কয়েক হাজার এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বেলাল উদ্দিন সোহেলের নেতৃত্বে এ বিশাল মানববন্ধন ও পথ সভায় বক্তব্য রাখেন, রাজাবাড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা মোঃ কামরুজ্জামান, কৃষকলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য আততাব উদ্দিন প্রমূখ।

বক্তরা বলেন, বর্ষা আসে, সঙ্গে আসে বন্যা সে সাথে শুরু হয় নদী ভাঙ্গন। দর্ভোগের আশঙ্কায় বুক কাঁপে মানুষের। লাখ লাখ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও ধেয়ে এসেছে বন্যা সে সাথে শুরু হয়েছে রাজশাহী গোদাগাড়ীতে সর্বনাশা পদ্মার নদী ভাঙন। তারা হাজার হাজার এলাকাবাসি ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মানের জোর দাবী জানান।
উল্লেখ্য গত বছরও বষা মৌসুমে প্রমত্ত পদ্মা পাড়ে প্রচন্ড নদী ভাঙ্গন শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িঘড়ি করে জিও ব্যাগ এবং বালির বস্তা ফেলে কোন রকমে পাড় কিছুটা রক্ষা যদিও তারপূর্বেই মানুষের বাড়ি-ঘর, শত শত বিঘা ফসলী জমি নদী গর্ভে চলে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী নিকট যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ের নিকট চাহিদা দিলেও এখনো বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছেন না।

প্রায় প্রতি বছর আষাঢ় মাসেই দেশে বন্যার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়ে যায়। প্রথমেই বৃষ্টি ও এসময়ে ভারত তাদের ফারাক্কার সবকয়টি গেট খুলে দেয় আর উজান থেকে ধেয়ে আসে বন্যা পদ্মা, মাহনন্দা নদীর পানি বড়ার সাথে শুরু হয় তীব্র নদী ভাঙন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয় নি।
গোদাগাড়ী উপজেলার নিমতোলা, চাক পাড়া, খারিজাগাঁতি ও মোল্লাপাড়ায় পদ্মা নদীতে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গতবছর মধ্যে নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা এলাকার ফসলি জমি, আম বাগান, হুমকির মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারী গবাদিপশু খামার, ছাগল উন্নয়ন খামার, হাসঁমুরগী খামার, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
প্রতি বছর বন্যার সময় পদ্মা নদী ভয়ালরূপ ধারণ করে। পদ্মার তীব্র ভাঙ্গনে আম বাগান, বিভিন্ন ফলের গাছ, ফসলী জমি যাচ্ছে নদীগর্ভে। গত ৫ দিন ধরে উপজেলার নিমতেলা গ্রামে নদী নতুন করে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রাস্তা, দোকান, ফসলি জমি, পাশাপাশি বসতবাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। এই বুঝি সব তলিয়ে গেল, সর্বনাশা পদ্মা নিয়ে গেল আমাদের জান মাল, গবাদিপশু। এলাকাবাসির দাবী ভাঙ্গন রোধে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়ার।
নিমতলা গ্রামের ৭০ বছর বয়সের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ও কৃষক আব্দুর রহমান চোঁখের পানি ঝড়াতে ঝড়াতে বলেন, বহু কষ্টে গড়া বসত বাড়ী, ফসলী জমি, রাস্তা, নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে, করেছিলাম, নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে অনেকের বাড়ীর ধারে চলে এসেছে। বাড়ীর পার্শ্ববর্তী টিউবয়েলটি নদী গর্ভে চলে গেছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলম বলেন, ওই এলকার ভাঙ্গনের বিষয়টি আমার জানা আছে। এর আগে ভাঙ্গন থেকে এলাকাবাসী রক্ষা করার জন্য বালির বস্তা ফেলা হয়েছিল। আগামী এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষায় ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশে বন্যা হয়। কারণ, নদীবাহিত পলি জমে জমেই এই বদ্বীপের জন্ম। বাংলাদেশের জন্ম। বন্যায় এই পলি সমতলে ছড়িয়ে মাটির উর্বরতা বাড়ায়। তাই, বাংলাদেশের জন্য বন্যা একই সঙ্গে অভিশাপ ও আশীর্বাদ। তবে এটা ঠিক, মানুষের পরিবেশবিধ্বংসী নানামুখী কার্যক্রমের কারণে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ক্রমশ বাড়ছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD