March 17, 2025, 9:14 am
হেলাল শেখঃ সারাদেশে কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীরা মাদক ও জুয়ার টাকা জোগাড় করতে করছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড (ক্রাইম)। ভয়ংকর মাদক সেবন ও বিক্রির সাথে জড়িতদের সাথে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মাদক সেবনের কারণে যুবসমাজের ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী কারা?। এসব মাদকের ব্যবসা করে অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ ও র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার করা হলেও অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকা, যাত্রাবাড়ি, মিরপুর, সাভার ও আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জমজমাট ভাবে চলছে ভয়ংকর মাদক ব্যবসা। এসব মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক সেবনকারীরা বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ফিটিংবাজি ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল। জানা গেছে, প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকসহ অনেকেই হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। মাদক সন্ত্রাসী কর্তৃক হয়রানিমূলক মামলায় পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে প্রতিবন্ধী হয়েছেন জাতীয় দৈনিক লাখোকণ্ঠ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ মাইনুল ইসলাম শেখসহ আরও অনেকেই।
এ বিষয়ে মাইনুল বলেন, আমি পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় লেখালেখি করেছি, এরই জের ধরিয়া সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ী বিপ্লব ও তাহার মাদক ব্যবসার আর্থিক যোগানদাতা আব্বাছ উদ্দিন ও আরও লোকজনের সহযোগিতায় আমাকে গত ০৩/০৭/২০২০ইং তারিখে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে ভোলা জেলা কারাগারে পাঠায়। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলা করার পূর্বে আমি গত ০৬/১২/ ২০১৮ইং এবং গত ১২/০৩/২০২০ইং তারিখে আশুলিয়া থানায় বিপ্লব ও আব্বাসের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করি। তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলা করিয়া আমাকে পুলিশ দিয়ে আটক করে মারপিট করায় এবং আমাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে বিভিন্ন কৌশলে হল কামালের ৫ম তলা বাড়িতে আমার ভাড়া বাসার কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে বাড়ির মালিক কামাল হোসেন ওরফে হল কামালের সহযোগিতায় আমার স্ত্রী মোছাঃ রকসানা ইসলামের নামের ব্যাংক একাউন্টের চেক বহি, ভূমির দলিল এবং সন্ত্রসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অপরাধের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসসহ নগদ অর্থ ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়, এ বিষয়ে কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি। আমি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে এ ঘটনা জেনে শুনে এ বিষয়ে আমি বাদি হয়ে মামলা করার জন্য আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।“ঢাকার কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী বিপ্লব এখন রাজাপুরের মাদক স¤্রাট” শিরোনামে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করায় তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা প্রতারণা মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায় বলে মাইনুল ইসলাম জানায়। তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানা পুলিশের দিয়ে বিপ্লব ও আব্বাসসহ তাদের লোকজন আমাকে কারাভোগ করিয়ে নির্যাতন করেছে, এখন আমি একজন প্রতিবন্ধি, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সঠিক বিচার দাবী করেন এই সাংবাদিক।
ভয়ংকর মাদকের নেশাসহ অসামাজিক কর্মকান্ড ধবংস করছে যুবসমাজকে। “হোম ডেলিভারি করা হয় মাদক” চাইলেই হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। রাজধানী ঢাকার আশপাশের এলাকা সাভার ও আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘মাদকদ্রব্য হোম ডেলিভারিতে’ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। গ্রামগঞ্জে পাড়া মহল্লায়ও চলছে বিভিন্ন মাদকের জমজমাট কারবার। এইসব মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক সেবনকারীরা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। জুয়া ও মাদকের বিষয়ে বিবাদ সৃষ্টি হওয়ায় বেশিরভাগ হত্যাকান্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে বলে সূত্র জানায়। সূত্র আরও জানায়, বিভিন্ন মাদকদ্রব্য অর্ডার করলেই হোম ডেলিভারি করতে পারছে সংশ্লিষ্ট মাদক কারবারিরা। মাদক সেবনকারীরাও খুব সহজেই কাছে পেয়ে যাচ্ছে নানারকম মাদক। অভিযোগ রয়েছে কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যও এসবের সাথে জড়িত থাকায় পুরোপুরিভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না মাদক কারবার ও জুয়া খেলা। এইসব মাদক ও জুয়া সিন্ডিকেট চক্রের সাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে। সচেতন মহল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক চেষ্টা করেও মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন।
বিশেষ করে চাল, ডাল, দুধ, চিনি ও পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আগে থেকেই ভোক্তা বাড়ি বসেই পেয়ে থাকেন। ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা এসব পণ্য চাহিদা অনুযায়ী ভোক্তার বাসা বাড়িতে পৌঁছে দেন, এখন দূর-দূরান্ত থেকেও ই-বাণিজ্যের কল্যাণে নিত্যব্যবহার্য বা সৌখিন সব ধরণের পণ্য চলে আসে ভোক্তার ঘরে। “তাই বলে মাদকের হোম ডেলিভারি”! হ্যাঁ সম্প্রতি যশোরের অন্তত ৬জন মাদক ব্যবসায়ী দম্প্রতি চাহিদা অনুযায়ী মাদক সেবীদের ঘরে মাদক ডেলিভারি দিয়ে থাকে।
বিশেষ করে দক্ষিণা ল, উত্তরা ল, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা সাভার, আশুলিয়া ও চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জীবন ধ্বংসকারী হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেট, মদ ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য অর্ডার করলেই হাতের কাছে পাচ্ছে (হোম ডেলিভারি) এইসব মাদক সেবন করে একদিকে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক সেবনকারীরা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। সেই সাথে মাদক সেবন করা অবস্থায় নেশার মধ্যে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ করে থাকে কিছু মাদক সেবনকারীরা। সেই সাথে তিন তাস ও ডিজিটাল চায়না জুয়া খেলার টাকা জোগাড় করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে মাদক সেবনকারী ও জুয়ারুরা। সূত্র জানায়, অনেক মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ার মালিকরা নিজস্ব সিন্ডিকেট তৈরি করে মোবাইল ফোনে কল করে অথবা ম্যাসেজ এর মাধ্যমে কাঙ্খিত স্থানে মাদক পৌঁছে দেয়।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুছ আলীর কাছে জানতে চাইলে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মাইনুল ইসলামের বিষয়টি আমি তদন্ত করেছি। এ বিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার বাড়ির মালিক কামাল হোসেন বলেন, মাইনুলের রুমের মালামাল তার পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছে, ডাকাতি বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। র্যাব ও পুলিশ জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। বর্তমানে কিশোর গ্যাং শব্দটা মানুষের কাছে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এ বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।