April 19, 2024, 10:56 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী তেঁতুলিয়ায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলায় দায়সারা আয়োজনে খামারিদের দুর্ভোগ পাইকগাছায় সপ্তদ্বীপার সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় বাল্য বিবাহ থেকে রক্ষা পেল কিশোরী পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে গোদাগাড়ীতে হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ গ্রেফতার ২ নড়াইলে র‍্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দিলেন এসপি মেহেদী হাসান নড়াইলে বিপুল পরিমাণ গাঁজা দুইজন গ্রেফতার ফুলবাড়ীয়া নেশার টাকা না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হ*ত্যা করলো ছেলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণের দাবীতে বরিশালে ইয়ুথ ফোরামের সড়ক অবরোধ
আশুলিয়ায় ধর্ষণ ও হত্যা বাড়ছে-পোশাক শ্রমিক নাজমা হত্যার বিচার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার

আশুলিয়ায় ধর্ষণ ও হত্যা বাড়ছে-পোশাক শ্রমিক নাজমা হত্যার বিচার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার

হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়ার উত্তর বেরণ এইচ পি টাওয়ার ইয়াগী বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেড শ্রমিক নাজমা হত্যার বিচার পায়নি বলে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ। এ দিকে আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী কর্তৃক ধর্ষণ, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন।
শনিবার (২৩ জুলাই ২০২২ইং) উক্ত বিষয়ে নিহত নাজমার বাবা হানিফ জানান, আমার মেয়ে নাজমা’র গণধর্ষণ ও হত্যাকারীদের মধ্যে একজনের বিচার হয়েছে, অন্যদের শাস্তি হয়নি। গত (২৮ ডিসেম্বর ২০২১ইং) গণধর্ষণের ঘটনায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একই স্থান ঘটনাস্থলে মিছিল মিটিং ও প্রতিবাদ করেন উক্ত কারখানার নারী পুরুষ কয়েক হাজার শ্রমিক। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে কর্মরিতি চালিয়ে রাস্তায় নেমে যায় শ্রমিকরা। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জরিত যারা, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার থেকে ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল কারখানার কর্মকর্তারা, এমনই অভিযোগ করেন ভিকটিম। ভিকটিম জানায়, ঘুমের ওষুধ পুষ করে তাকে তিনজন গণধর্ষণ করেছে, বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করেন অনেকেই। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে প্রথমে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয় পুলিশ কেস বলে। এরপর ঘটনাস্থলে সকাল থেকে রাত্রী পর্যন্ত তাকে উক্ত কারখানায় রেখে রাত ৮টার পর তাকে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জাহাঙ্গীর আলম নামের একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে পরের দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে পুলিশ জানায়। এ দিকে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন যে, এ মামলার কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেননি।
আশুলিয়ার জামগড়ার রূপায়ন ১নং গেইট, রবিউল সরদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া, পাবনার সাঁথিয়ার আবু হানিফ ওরফে নাজমুল এর মেয়ে মাহফুজা আক্তার নাজমা (১৬) কে গণধর্ষণের ঘটনায় আশুলিয়া থানা মামলা না নেওয়ায় সে ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেন ভিকটিম। ভিকটিম নিহত হওয়ার পর পুলিশ মামলা রুজু করে। নাজমাকে গণধর্ষণ করিয়া হত্যা ও সহায়তা করার অপরাধে আশুলিয়া থানায় মামলা করার পর মোঃ আব্দুর রহিম (২৬), ১নং আসামীকে জনতা কর্তৃক আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরপর এ মামলার ২নং আসামী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার বিপিনগর গ্রামের আব্দুল লতিফ এর ছেলে মোঃ রিপন (৩৫) এর সাভারের বিরুলিয়া এলাকার একটি বাগান থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এরপর মামলার ৩নং আসামী শিপনকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালায় র‌্যাব। র‌্যাব-১ এর বিশেষ একটি দল ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল টেকিংয়ের মাধ্যমে ছায়া তদন্ত করে ফেনী জেলার সোনাগাজী আকিলপুরের মোঃ ইব্রাহিম খলিল শিপন (৩০) কে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেন। গত ৫ জানুয়ারি ২০১৯ইং ভিকটিম মাহফুজা আক্তার নাজমা (১৬), গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর (৬ জানুয়ারি ২০১৯ইং) নাজমা নিজে বাদী হয়ে প্রথমে আশুলিয়া থানায় মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিবরণঃ নাজমা জানায়, জামগড়া রূপায়ন ১নং গেইট, রবিউল সরদারের বাড়ীতে মা বাবাসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভাড়া থেকে জামগড়া ইয়ার্গী বাংলাদেশ লিঃ পোশাক কারখানায় সুইং অপরেটার হিসাবে চাকুরি করতেন। নাজমার সম্পর্কে চাচা রহিম ও রিপন ও শিপনসহ তারা বিভিন্ন পদে এক সাথে কাজ করতেন একই পোশাক কারখানায়। প্রতিদিনের ন্যায় গত ০৫/০১/২০১৯ইং তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় অফিস ছুটির পর চাচা আব্দুর রহিম (২৬) সহ আমি পায়ে হাটিয়া বাসায় যাওয়ার পথে আমাদের ফ্যাক্টরীর প্রায় ২০০গজ দুরে গলির রাস্তায় পৌছার পর অপরিচিত আরও ২জন বিবাদীর সহায়তায় ১নং বিবাদী রিপন ও শিপন আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার পরিহিত কাপড় খুলিয়া আমাকে তারা ধর্ষণ করে। এ ঘটনার সাথে ৫জন জড়িত বলে সে বেঁচে থাকা অবস্থায় জানায়। এক পর্যায়ে রাত ১২টার দিকে উক্ত বিবাদী রিপন, শিপনসহ ৫ জন ব্যক্তি নাজমাকে বাসায় পৌছাইয়া দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সকালে থানায় গিয়ে মামলা করার জন্য অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় লোকলজ্জায় নাজমা ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেন। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী-নাজমাকে নির্যাতন ও গণধর্ষণ করার পর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয় আশুলিয়ার সরকার মার্কেট নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় মামলা নং ১০/ তারিখঃ ০৭/০১/২০১৯ইং। ধারা: ৯(৩)/৩০, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩: ধর্ষণ করিয়া হত্যা ও সহায়তা করার অপরাধ।
এ ব্যাপারে নাজমার বাবা আবু হানিফ জানান, উক্ত মামলার আসামী রহিম ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছে, কিছুদিন আগে আদালত থেকে জামিনে আসছে এ মামলার ৩নং আসামী ইব্রাহিম খলিল শিপন (৩০) যিনি ইয়াগী বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেড এর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। মামলার ৩জন আসামীর তথ্য পাওয়া গেলেও অন্য আরও দুইজন ব্যক্তি জড়িত ছিলো তারা আজও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি এবং এ মামলায় তাদের নাম নেই। নাজমা’র বয়স (১৬), ২বছর সুইং অপরেটার হিসেবে চাকুরি করেন। কাজ শিখে সুইং অপারেটার হতে আরও এক বছর সময় লাগছে। শিশু শ্রম আইনে পোশাক কারখানায় ১৮ বছরের কম কোনো ব্যক্তিই চাকরি করতে পারবেন না এমন নিয়ম রয়েছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা আবার তদন্ত করলে হয়ত কেচু খুঁজতে গিয়ে সাপের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে শ্রমিকরা অনেকেই জানায়।
ঢাকা শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মামুন ও আশুলিয়া থানা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা’র অফিসার এবং আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল উক্ত ঘটনা তদন্ত করেন। আশুলিয়া থানার জামগড়া ইয়াগী বাংলাদেশ লিমিটেড পোশাক কারখানার ৫ম তলায় যে মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে, জাহাঙ্গীর নামের একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। র‌্যাব জানায়, উক্ত পোশাক কারখানার ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে ৫ম তলার কারখানার পিএম মোঃ ইমন এ ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকে বলে কারখানার শ্রমিকরা জানায়। আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী ও ফিটিংবাজ, চাঁদাবাজদের কাছে এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অনেকেই জানান।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক ওসি (ইন্টেলিজেন্ট) জামাল শিকদার ও তদন্ত (ওসি) জিয়াউল গণমাধ্যমকে বলেন, একটি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিক গণধর্ষণের ঘটনায় ওইদিন রাতেই মামলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম নামের একজনকে আটক করে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। নাজমা হত্যার ঘটনা আদালতে বিচার চলমান।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD