April 25, 2024, 1:09 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
নড়াইলে ষাঁড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীর হাতে পুরস্কার বিতরণ স্বরূপকাঠিতে ধর্ষনের অভিযোগে চেয়ারম্যানের ভাগনে গ্রেফতার গোদাগাড়ীতে চাঁদাবাজি মামলায় প্রভাবশালী দলের দুই যুবক গ্রেপ্তার মরনবাধ ও ভারতের বৈরী আচরণের প্রভাবে মহানন্দা নদীর বেহাল দশা বাবুগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম খালেদ হোসেন স্বপন এর সমার্থনে সভা নলছিটিতে আদালতের আদেশ অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ ময়মনসিংহ সদরের কুষ্টিয়া ইউনিয়নে শত্রুতা করে ফসলের ক্ষতি করার অভিযোগ তীব্র তাপদাহে খেটে খাওয়া মানুষের পাশে ভালুকার ওসি কামাল সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন কেশবপুরে বিএনপি নেতা পৌর কাউন্সিলর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪ হাজার পিচ স্যালাইন বিতরণ
নওগাঁয় দাবী এনজিও’র সাবেক কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে পিটালেন কর্তৃপক্ষরা

নওগাঁয় দাবী এনজিও’র সাবেক কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে পিটালেন কর্তৃপক্ষরা

রওশন আরা শিলা,নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাকে অবসরকালীন পিএফ ও গ্র্যাজুইটি’র টাকা দিবে বলে অফিসে ডেকে নিয়ে পরিবারসহ জিম্মি করে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর জাতীয় জরুরী সেবা ‘৯৯৯’ ফোন দিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ঘটনায় ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মামলা নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। মোশাররফ হোসেন (৩৮) জেলার বদলগাছী উপজেলার কাশিয়ারা গ্রামের মৃত আয়চাদ আলীর ছেলে। গত বুধবার (৬জুলাই) রাত ৯টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার চকরামপুর (কাঁঠালতলী) এলাকায় বেসরকারি সংস্থা ‘দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থার’ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, প্রায় ১৪ বছর পূর্বে দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থায় মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন মোশারফ হোসেন। পরে শাখা ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। সংস্থায় চাকুরি করাকালীন তিনি পিএফ (প্রভিডেন্ট ফান্ড) ও গ্র্যাজুইটি বাবদ প্রায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাওনা আছেন। টাকাগুলো পাওয়ার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও আজকাল বলে কালক্ষেপন করা হচ্ছিল। সর্বশেষ গত ৬ জুলাই ওই অফিস থেকে ফোন করে তাকে তার পাওনা টাকাগুলো নিয়ে যেতে বলা হয়। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি স্ত্রী সাবিনা বেগম, দুই সন্তান মেয়ে (১৫) ও ছেলে (৪) কে নিয়ে সংস্থার অফিসে যান।

অফিসে যাওয়ার পর তাকে একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র কাগজে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। এ নিয়ে তাদের রাত ৯টা বাজে। কিন্তু পাওনা টাকায় হিসাবের গড়মিল হওয়ায় তিনি প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। দাবী এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার সিমা (৩৮), পরিচালক মুনির চৌধূরী (৪৫), প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান(৩৬), আ লিক ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ ও অফিস সহকারি হাসান (৪২) ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের অফিসের একটি ঘরে আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এতে কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন মোশারফ। এসময় তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ঘরে রেখে বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে অন্ধকারে আটকিয়ে রাখা হয়। এসময় মোশারফকে তারা মারপিট শুরু করলে এক পর্যায়ে তিনি সংস্থা থেকে পালিয়ে রাস্তা চলে আসেন। পরে তিনি ‘৯৯৯’ ফোন করা হলে থানা পুলিশ তার স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধার করে।

শুধু মোশারফ হোসেন না, পিএফ ও গ্র্যাজুইটি’র টাকা নিয়ে সংস্থার অনেক কর্মচারীর সঙ্গে এমন অশোভন আচরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কোন কর্মচারী ওই সংস্থা থেকে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে তাকে যেমন ভোগান্তীতে পড়তে হয়, তেমনি তার পাওনা টাকাও নয়-ছয় করা হয়। ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হয়। পরে অভিযুক্ত ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মামলা নথিভুক্ত হয়নি।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন বলেন, সংস্থা থেকে গত বছরের জুনে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। এরমধ্যে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা (৭ কিস্তিতে) পরিশোধ করেছি। ঋণের বাঁকী টাকা ছাড়া সংস্থা আমার কাছে অন্য কোন ধরনের টাকা পাবে না। কিন্তু তারপরও আমার পাওনা প্রায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে তারা ৩ লাখ টাকা কেটে নিবে। আনুষঙ্গিক আরো কিছু কেটে নিয়ে সবশেষে ২ লাখ টাকা তারা দিতে চায়। আমার পাওনা হিসাবের সঙ্গে অসঙ্গতি থাকায় প্রাপ্তি স্বীকারপত্র কাগজে স্বাক্ষর না করায় আমাকে তারা মারপিট করেছে এবং পরিবারকে ঘরে আটকে রাখে। পাওনা টাকা চাইলে তারা আমাকে হত্যা করে গুম করবে বলে হুমকি দেয়।
তিনি আরো বলেন, আমি কেন অন্য কোথাও চাকরি করবো। সেটা ছেড়ে দিয়ে এসে আবারও তাদের সংস্থাতে যোগদান করতে বলে। আমার সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে তার বিচার চাই। সেই সাথে সংস্থার কর্তৃপক্ষদের গ্রেফতারের দাবী জানাই। তবে অভিযোগের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেনের স্ত্রী সাবিনা বেগম বলেন, এনজিও’র অফিসের একটি ঘরে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে অন্ধকারে বন্দি করে রাখে। তার আগেই স্বামী ঘরের বাহিরে চলে যায়। এসময় স্বামীর চিৎকার ও হৈ-চৈ এর শব্দ শুনতে পায়। পরে অভিযুক্তরা এসে আমাকে শ্লীলতাহানীল চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার বাসীন্দা মশিউর রহমান। তিনি ‘দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থায়’ প্রধান হিসাবরক্ষক পদে ছিলেন। গত ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, ২০০১ সালে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছিলাম। সেখানে আমার পাওনা ছিল ৩৩ লাখ টাকার ওপরে। সংস্থা থেকে কিছু ঋণ নিয়েছিলাম। আমার পাওনা থেকে ৩লাখ ২০ হাজার টাকা কেটে নিয়ে বাঁকী টাকা আমাকে দেওয়া হয়। ওই সংস্থায় আমার মতো অনেকের সাথে এমন অন্যায় করা হয়েছে।

দাবী এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার সিমা’র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দাবী এনজিও’র পরিচালক মুনির চৌধূরী বলেন, মোশারফ হোসেন যা বলেছে সব অযৌক্তিক। প্রতিষ্ঠানের কিছু নিয়ম কানুন আছে যা তিনি মানতে চাননা। সবকিছু কাগজপত্র প্রস্তুত করে যখন তাকে চেক দেওয়া হবে তখনই সে ঝামেলা শুরু করে। তার পাওনা টাকা না নিয়ে অফিস থেকে যাবে না। বাধ্য হয়ে আমরা থানা পুলিশকে জানালে রাত ৯টার দিকে তাদের অফিস থেকে বের করে নিয়ে যায়। এছাড়া তার পরিবারকে জিম্মি বা তাকে মারপিট করা হয়নি বলে অভিযোগ অস্বীকার করেন।

নওগাঁ সদর থানার ওসি-তদন্ত রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯’ থেকে ফোন পেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।#

রওশন আরা পারভীন শিলা
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি।।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD