শুক্রবার, ২০ মে ২০২২, ০৪:০৪ অপরাহ্ন
হেলাল শেখ ঃ
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মত বাড়ছে কিন্ডাগার্টেন স্কুলসহ নামে বে-নামে বিভিন্ন স্কুল। এসব স্কুলের মালিকপক্ষ সরকারী আইনের তোয়াক্কা না করে অনিয়ম, দূর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে বলে সচেতন মহলের অভিমত। এমন কি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে অসামাজিক কর্মকান্ডের ঘটনাও ঘটছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়লেও বাড়েনি শিক্ষার মান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্থ কামানোর কারখানা বানিয়েছেন বেশিরভাগ শিক্ষক।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ নেই, পরিবেশ পরিচ্ছন্নতাও তেমন নজরে আসেনি। স্কুলের ভেতরে দূগন্ধে নাক ধরে চলা ফেরা করতে দেখা যায়, ছোট কমলমতি শিশুদেরকে। সাভার উপজেলার আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকার আমির মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অনেকেই জানান, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৩৩), ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গত বছর ২০১৭ ইং সালের এপ্রিল মাস থেকে এপর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী সুন্দরী কিশোরী মেয়েকে শিক্ষক নামের নরপশু জানোয়াররা নির্যাতন ও ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এক দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকি অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে বলে অনেকেই জানান। “শুধু আশুলিয়ায় সাত শিশু শিক্ষার্থী মেয়েকে ধর্ষণ এর ঘটনার সাথে জড়িত এক নরপশু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন”। এরকম অনেক শিক্ষক এলাকায় এসেই আগে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ায়, এরপর সুযোগ বুঝে স্কুল খুলে বসেন, এরপর শুরু হয় কার্যক্রম।
জানা গেছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় এক শ্রেণীর লোক আছে, আগে সেলুনের কারিগর-চুল কাটার কাজ করতো, এখন সে শিক্ষক বনে গেছেন, এই শিক্ষকের মত অনেকেই সুন্দরী শিক্ষকা নিয়োগ দিয়েই তাদেরকে জিম্মি করে কৌশলে তাদের নির্যাতন ও কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে সামাজিক ভাবে অনেক বিচারও হয়েছে। সচেতন মহল বলছেন, শিক্ষকরা মানুষ তৈরির কারিগর, জাতির মেরুদন্ড আর সেই শিক্ষকরাই যদি নারীদের নির্যাতন করে, তারা জাতির মেরুদন্ড হয় কিভাবে? যে শিক্ষক তার শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে, তারা কখনো জাতির মেরুদন্ড হতে পারে না। অনেকেই বলেন, শিক্ষাই তাতির মেরুদন্ড, আসলে কি তাই ? না কি সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।
উক্ত বিষয়ে সাভার উপজেলার ২৯৯ নং তালিকায় নামসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের যদি কোন শিক্ষক ধর্ষণ করে তার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ঢাকার জেলার সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মাত্র ১২১টি, আর কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয় রয়েছে ৪৪৬ টি। তুলনামূলক ভাবে চার ভাগের এক ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি। এর বাইরেও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে অনেকেই জানান।
বিশেষ করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় প্রধান হিসেবে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহরিয়ার মেনজিসকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। ওই সময়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গত বছরে ৮এপ্রিল ২০১৭ ইং একাধিক জাতীয় দৈনিকসহ অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, কলেজ, ও কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিজি প্রেসের কর্মীদের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে। আরও অনেক তথ্য রয়েছে, যা লিখতে গেলে ইতিহাস হবে।
উক্ত বিষয়ে সাভার উপজেলার সহকারি শিক্ষা অফিসার সৈয়দা পারভীন’সহ একাধিক অফিসার বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বা সহকারি শিক্ষক যদি অনিয়ম, দূর্নীতি করেন, প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবং নারী নির্যাতন বা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসন সে বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা কোন সমস্যা হলে আপনারা আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।