মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন
সৈকত আহমেদ বেলাল, জামালপুর:
জামালপুরের মেহেদী হাসান (৪৫) দক্ষিণ আফ্রিকায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে। সাথে থাকা দশ বছরের সন্তানও গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরিবারের স্বজনদের অভিযোগ, ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পুপো ও পুমালাঙ্গা প্রদেশের সীমান্তে সিয়াবুসেয়াত এলাকায় সন্ধ্যায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মেহেদী হাসান জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাজিপুর দোয়ানিপাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে। নিহতের লাশ বাংলাদেশে আনা হবে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসান ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রদেশের সিয়াবুসেয়াত নামের গ্রাম এলাকায় তিনি স্থানীয় আফ্রিকান এক নারীকে বিয়ে করে সে দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার স্ত্রীর নাম রাখা হয় আছিয়া। পুমালাঙ্গা প্রদেশে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। তার ১০ বছরের এক ছেলে ও ৬ বছরের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তিনি সেখানে স্থায়ীভাবে ব্যবসা করে আসছিলেন। তার বড় ভাই মেহেদী মাসুদও দক্ষিণ আফ্রিকার একই এলাকায় বাস করেন। তার মৃত্যুতে স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে।
নিহত মেহেদী হাসানের মামা মেষ্টা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবু জানান, এ ঘটনা সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে জানাজানি হয়। বাংলাদেশী কমিউনিটির লোকজনদের মাধ্যমে তার আফ্রিকান নাগরিক স্ত্রী আছিয়া এবং তার বড় ভাই মেহেদী মাসুদ লাশ সনাক্ত করেন। তাদের ১০ বছর বয়সী ছেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মেহেদী হাসানের চাচা ফাররুখ আহমেদ জানান, মেহেদী হাসান স্থানীয় পেপ স্টোর থেকে সন্তানদের জন্য কাপড় কিনে নিজ গাড়িতে উঠার সময় কয়েকজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যান। মেহেদী হাসান ওই এলাকার একজন বড় ব্যবসায়ী এবং বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা হিসেবে খুব পরিচিত ছিলেন। পুলিশ মেহেদী হাসানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে স্থানীয় হিমাগারে রেখেছে। তার স্ত্রী-সন্তানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা মেহেদী হাসানের লাশ বাংলাদেশে আনার সম্মতি দিয়েছে। তার লাশ দেশে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। লাশের সাথে তার স্ত্রী-সন্তানরাও দেশে আসবে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম।