বুধবার, ২৫ মে ২০২২, ০৭:২০ অপরাহ্ন
হেলাল শেখঃ
মোবাইল ও ফেসবুক যোগাযোগ মাধ্যমকে ভালো কাজের পাশাপাশি প্রতারণা এবং মিথ্যাচার করছে অনেকেই।
এক যুগ ১২ বছর আগেও যোগাযোগব্যবস্থা ছিলো চিঠিপত্র, যা এখন মোবাইলে চলছে। আর মোবাইল ও ফেসবুক ব্যবহার করে মানুষ আজ সবকিছু হাতে কাছে পাচ্ছে।
বিশেষ করে এখন যেখানে-সেখানে দোকানে হাতের কাছেই অতিসহজে মোবাইল পাচ্ছে মানুষ! তাও আবার সামান্য দামে সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল। আর এই মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহারও অনেকটা মানুষের নেশায় পরিণত হয়েছে বলে অনেকেই জানান।
বিশেষ করে মোবাইল কোম্পানিগুলো ৭শত (৭০০) টাকার বিনিময়ে নতুন মোবাইল বাজারে ছাড়ছে আর সেই মোবাইল কিনছে সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই থেকে ৩ হাজার টাকায় মোবাইল কিনে ফেসবুক চালাচ্ছে মানুষ। বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের ফেসবুক এর লাইক, শেয়ার, কমেন্টের বিষয়ে ধারণা নেই, তবে পরকীয়া প্রেম ভালোবাসা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন। “এ বিষয়ে কোনো মিডিয়া বা কোনো সংস্থা সচেতনতামূলক প্রচার করছেন না” এ ব্যাপারে আমাদের সবার সচেতন হওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সিলেটের মোছাঃ ময়না (১৯) নয়ন (৩৩) এর প্রেম হয় মোবাইলের রং নাম্বারে এক বছরের মধ্যে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর তাদের সংসার ভাংগে ছাড়াছারি হয়ে যায়, তাদের প্রেমের ইতি হয়।
কুমিল্লার খাদেজা (১৭) মোবাইল ফোনে আলাপ করে রং নাম্বারে প্রেম করেন, (৩০) বছরের এক যুবকের সাথে। সংসার করে কিছুদিনের মধ্যেই সংসার ভাংগে তাদের। পরকীয়া প্রেমের বিয়েতে কেউ সুখী হয় না বলে জানান তারা।
বগুড়ার শিবগঞ্জের শিউলী ও সাইফুল মোবাইল ফোনে রং নাম্বারে কথা বলে প্রেম হয়। মাত্র ২-৩ বছরের মাথায় তাদের সংসার আলাদা হয়ে যায়। তারা বলেন, সামান্য কথা কাটাকাটির কারণে তাদের বিবাদ হয়, এরপর আলাদা হয়ে যায় তারা। শিউলী বলেন, সাইফুল ইসলাম আগেও একটি বিয়ে করেছিল।
১৫ জুলাই ২০১৮ইং জানা গেছে, সিলেট, কুমিল্লা, গাজীপুর, নরসিংদীর শিবপুর, মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগর ও ঢাকার শিল্পাঞ্চল সাভার, আশুলিয়ায় মোবাইলের রং নাম্বারে এবং ফেসবুকে শত শত পরকীয়া প্রেম ভালোবাসা হয়েছে।
জানা যায়, বিভিন্ন বয়সের প্রেমপ্রিয়াসী নানারকম পেশাজীবী মানুষ এবং বেকার লোকজন পরকীয়া করে থাকে। বিবাহিত নারী পুরুষদের সঙ্গেও এসব ঘটনা হচ্ছে। এরা বিভিন্ন সময়ে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করে মোবাইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে। জরীপে দেখা যায়, শুধুমাত্র দৈহিক মেলামেশা করতেই পরকীয়া করে থাকে বেশিরভাগ প্রেমিক প্রেমিকা।
জানা গেছে, কিছু নারী তাদের নিজের ইচ্ছায় দৈহিক মেলামেশা করে, আবার চাহিদামত টাকা না পেলে, তারা প্রতিশোধ নিতে আদালতে গিয়ে মামলা করে পুরুষ মানুষের বিরুদ্ধে। আবার কিছু পুরুষ মানুষও নারীদের ভোগ করতে বিভিন্ন কৌশলে ফুসলিয়ে ইজ্জত নিয়ে থাকে বলে এরকম অনেক অভিযোগ রয়েছে। কেউ কারো খবর রাখে না, এ যেন দেখার কেউ নাই।
বিশেষ করে নারী ও পুরুষের প্রেম ভালোবাসা বা পরকীয়া কোনো বয়সসীমানা মানে না, জাত, বেজাত দেখে না, পরিবার, বংশ, সমাজ ও মানসম্মানের দিকে তাকায় না কেউ।
মোবাইলে রং নাম্বারে কল আসলেই হলো, হোক না সে বুড়া বুড়ি বা ছুড়াছেড়ি। বয়স দিয়ে কি আসে বলো? নিজের ভাষা পাল্টে যায়, বলে থাকে সোনা, ময়না, পাখি, জান, জানের জান-আরও কত কি ইত্যাদি। কি বিচার করবে প্রেম পরকীয়ার? পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে আসে নারী পুরুষ প্রেমপ্রিয়াসরা।
অভিমত অনেকের, এখন আবার ডিজিটাল মোবাইল আর ফেসবুকও মাদকের নেশায় মত পরিণত হতে চলেছে, তা একবার ধরলে আর ছাড়তে চায় না কাঁঠালের আঁটার মত। জীবনটা শেষ করেই ছাড়ে পরকীয়ায়। এ কেমন ভালোবাসা? পরিবারের কোনো সদস্য যদি এমন করে তার জন্য আমরাইতো দায়ী তাই নয় কি?
এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে, অবুঝ ছেলে মেয়েরা বা পরিবারের কোন সদস্য কি করছে? কার সাথে চলাফেরা করে তা নজর দিতে হবে। নারী পুরুষ যেই হোক না কেন তার মোবাইলটা হাতে নিলেই জানা সম্ভব সে কোন পথে হাটছে? কোন সন্তান যদি খারাপ হয় এর জন্য দায়ী কারা? ফেসবুক বা মোবাইল নয়, আগে মা বাবা, পরে সমাজ। আমাদের সবাইকে সচেতনতামূলক প্রচার করা দরকার। এ বিষয়ে আপনাদের মতামত কি?