মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২, ০৬:০৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়াসহ এক পোশাক কারখানার মালিকপক্ষ চার শতাধিক শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে নানাভাবে তালবাহানা করার অভিযোগ উঠেছে। অনেকেই জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে শ্রমিকদের গায়েল করে মাসের পর মাস বেতন না দেয়ার কারণে একটি মহল এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করছে।
২২ জুলাই ২০১৮ইং জানা গেছে, আশুলিয়ার জামগড়ার বাঘবাড়ি রোডে অবস্থিত “বাঁধন নামের একটি পোশাক কারখানা” এ কারখানাতে এ বছরের শুরু থেকেই শ্রমিকদের বেতন দেয়া নিয়ে অনিয়ম করে আসছেন মালিকপক্ষ। শ্রমিকরা জানান, তারা বাসা ভাড়া সময়মত না দিতে পারায়- বাসার মালিক তাদেরকে বাসা থেকে বেড়হতে বলে অপমান করছে। মুদি দোকানে বাঁকি টাকা না দিতে পারায় খরচ আর বাকিতে দিচ্ছেন না দোকানদার। অনেক শ্রমিক সারাদিনে এক বেলা খেয়ে ও না খেয়ে, অনাহারে অর্ধাহারে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থাতে আসন্ন ঈদের সামনে শ্রমিকরা তাদের সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার মালিকের কাছে বেতন বোনাস দ্রুত দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। শ্রমিকরা বলেন, আমরা আন্দোলন করতে চাই না, আন্দোলন করলে সরকারের বদনাম হবে।
জানা গেছে, কিছু পোশাক কারখানার মালিকপক্ষ সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রায় প্রতি মাসে শ্রমিকদের পাওনা বেতন দেয়া নিয়ে তালবাহানা করে থাকেন। শ্রমিকরা কোন প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন তারা। এর কারণে এক শ্রেণির শ্রমিক নেতা কৌশলে শ্রমিকদের ফুসলিয়ে হাত করে শ্রমিকদের দিয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ২০ জুলাই, শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেসে সিপিবির সহযোগী শ্রমিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার পোশাক কারখানার মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের অত্যাচার, জুলুম, হামলা, মামলা, হুলিয়াসহ কোনকিছুতেই আমরা তোয়াক্কা করব না। তিনি বলেন, ঈদের পরে শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন হবে। যে আন্দোলন ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালকে ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি জানান। “মালিক পক্ষ থেকে ন্যুনতম মজুরি ৬ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ কওে জলি বলেন, “আমরা যদি মাঠে না নামি,আন্দোলন না করি তা না হলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পাবে না। উক্ত সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, সকলের কাছে শ্রমিক শ্রেণির দোহাই দিয়ে বলছি-এখন থেকে প্রতিটি শ্রমিক ভাইকে বলতে হবে ১৬ হাজার টাকা মজুরি না নিয়ে আমরা কেউ ঘুমাবো না, কেউ আর চুপ থাকবো না। ওই দিন শ্রমিকরা সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে তারা সুপ্রিম কোর্টেও কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ শেষ করেন।
উক্ত আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার “বাঁধন পোশাক কারখানার বিষয়ে “শ্রমিক নেতা মামুন বলেন, এ কারখানায় প্রায় চার শতাধিক শ্রমিক রয়েছে, তাদের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, আমি অনেক শ্রমিকদের নেতা, তাই মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে জুন মাসের বেতন ৩০ জুলাই দিবেন বলে তারা জানিয়েছেন, এবং আগস্ট মাসের ১২ তারিখে ঈদ বোনাসসহ জুলাই মাসের বেতন দেয়ার কথা রয়েছে।
২২ জুলাই বিকালে এ বিষয়ে জানতে চাইলে “বাঁধন পোশাক কারখানার প্রশাসন আকতার হোসেন বলেন, কারখানায় বিদ্যুৎ এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই কারণে কারখানাটি বন্ধ আছে। আর শ্রমিকদের প্ওানা বেতন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম, এখন ঘুমাবো পরে কথা বলেন। এ বিষয়ে জামগড়া জোন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বাঁধন পোশাক কারখানার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিল পরিশোধ করলে আমরা ওই সংযোকটি চালু করে দিবো।
সাইফুল ইসলাম হেলাল শেখ / নতুনবাজার।