ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ঘোষণার পর বুধবার হাজার হাজার মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী গোলা বন্ধে সম্মত হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ৫০ সহস্রাধিক মানুষ স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিয়েছিল। এসময় ১২ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, সমস্যা দেখা দিলে বিদ্যমান হটলাইন কন্টাক্টের মাধ্যমে অথবা আঞ্চলিক কমান্ড পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তা সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

দুই দেশের সীমান্তে ও কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বিরল এক সমঝোতায় মঙ্গলবার দক্ষিণ এশিয়ার বৈরি দুই দেশ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন। সামপ্রতিক বছরগুলোতে নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদ একে অপরের বিরুদ্ধে সীমান্ত লঙ্ঘন ও ধারাবাহিক গুলিবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছিল। গত দেড় বছরে সীমান্ত লংঘন করে ভারতীয় বাহিনীর চালানো হামলায় কেবল পাকিস্তানেরই শতাধিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি ইসলামাবাদের।

ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক অভিযান বিষয়ক মহাপরিচালক পর্যায়ে হটলাইন যোগাযোগের পর নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে এ সমঝোতা হয় বলে জানিয়েছে ডন। ইসলামাবাদের উদ্যোগে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মেজর জেনারেল সাহির শামসাদ মির্জা ও ভারতীয় বাহিনীর লেফটেনেন্ট জেনারেল অনিল চৌহানের মধ্যে এ যোগাযোগ হয়।

দুই সামরিক কর্মকর্তার আলোচনার পর দুই দেশের পক্ষ থেকে প্রায় একই ধরনের বিবৃতি দেওয়া হয়। অভূতপূর্ব এ বিবৃতিতে কেউই অন্যের অন্যায় আচরণ বিষয়ে কিছু বলেনি, আগের বিবৃতিগুলোতে প্রায়শই যার উল্লেখ্য বিবৃতিগুলোর ভাষা এতটাই কাছাকাছি যে সীমানার পরিচিতি ও আরও কিছু বিষয়ে সামান্য মতপার্থক্য না থাকলে নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদ এ ইস্যুতে যৌথ বিবৃতি দিতে পারত বলেও মন্তব্য ডনের। সামরিক বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের এ যোগাযোগ মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় হয়, যার কিছু সময় পর দুই দেশই এ সংক্রান্ত বিবৃতি দেয়।

সাধারণত এ ধরনের আলোচনার কয়েক ঘণ্টা পর দুই দেশের পক্ষ থেকে তা জানানো হত। এবারের তড়িঘড়িতে আগে থেকেই এ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল এবং দুই মহাপরিচালকের যোগাযোগ কেবল আনুষ্ঠানিকতা ছিল বলেও ধারণা ডনের। পাকিস্তানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল মঙ্গলবার ওই সমঝোতার বিষয়ে রাজি হওয়ার পর এ আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ও পরে বিবৃতি ছাড়া হয় বলে অনুমান পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমটির।

তারা বলছে, উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও সংযমী আচরণ করতে এবং হটলাইন ও স্থানীয় পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সংকট মোকাবিলায় দুই মহাপরিচালক সম্মত হয়েছেন।