রফিকুল ইসলাম রাজু।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য খাগড়াছড়িতে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তিচুক্তির ২২বছর পূর্তি উদযাপিত হয়েছে।
২ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও জেলা পরিষদের আয়োজনে অত্র অঞ্চলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে টাউন হলে গিয়ে শেষ হয়।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ মাঠ প্রাঙ্গনে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শান্তিচুক্তির ২২তম বর্ষপূর্তির উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির সংসদ ও ট্রাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
পরে শান্তিচুক্তির ২২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ির সংসদ ও ট্রাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এসময় খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ফয়জুর রহমান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, ডিজিএফআই কমান্ডার কর্ণেল নাজিম উদ্দীন, খাগড়াছড়ি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল সাজ্জাদ, খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার ল্যা. কর্ণেল আরাফাত, খাগড়াছড়ি ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও উন্নয়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ব ও পরবর্তী অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়নের স্রোতধারার সাথে পার্বত্যবাসীকে সম্পৃক্ত করতে চায়। শেখ হাসিনার সরকার শান্তিচুক্তি করে পাহাড় ও সমতলের বৈষম্য দূর করতে সক্ষম হয়েছে। ভ্রতৃঘাতি সংঘাতও বন্ধ করতে সক্ষম হবে।
খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ফয়জুর রহমান বলেন, একই ছামিয়ানার নীচে, একই ব্যানারে, একই মঞ্চে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সকলের উপস্থিতিই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের বড় স্বীকৃতি। তিনি আরো বলেন, “সারাদেশের ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামেও শান্তিচুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির ফলে পাহাড়ের উন্নয়ন হচ্ছে এবং শান্তি বিরাজ করছে। পার্বত্য চট্রগ্রামে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সহঅবস্থান করার জন্য সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী এ চুক্তির বিরোধীতা করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন, পাহাড়ের সংঘাতের দিন শেষ। পাহাড়ে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। সমতল থেকে দলে দলে মানুষ আসছে পাহাড়ের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে। এখানে পর্যটন শিল্পের বিকাশ শান্তিচুক্তিরই ফসল।
এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শানে আলম, পৌর মেয়র মোঃ রফিকুল আলম, জেলা পরিষদ সদস্য মংসাইপ্রু চৌধুরী অপু, পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
শান্তিচুক্তির ২২বছর পূর্তি উপলক্ষে খাড়াছড়ি রিজিয়ন ও জেলা পরিষদের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়াম মাঠে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে। এতে খাগড়াছড়ি হিল স্টার, অরন্য ব্যান্ড, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিল্পীদের পরিবেশনা, সম্প্রীতি নৃত্য, ফানুস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন বিভিন্ন পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও স্থানীয় ও চট্টগ্রামের শিল্পীরাও অংশগ্রহণ করবেন।
Leave a Reply