মোঃ ফরহাদ আলী ।।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
দশম পেরিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবী বিশ্লেষক ও ইসির। এছাড়াও স্বাধীন বাংলায় এটিই প্রথম সবচেয়ে অ-সহিংসতা সম্পন্ন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনসহ মহাজোটের নেতা ও প্রার্থীরা।
৪৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসন। ১৫টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা এ বৃহত্তর আসনটি বেশিরভাগ সময় বিএনপি’র দখলে ছিলো। তবে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেয়ে নির্বাচিত হন কানসাট বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম রাব্বানী।
দীর্ঘ ৫ বছর ক্ষমতায় থেকে নিজ ইউনিয়ন কানসাট ছাড়া অন্যান্য এলাকায় উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের তেমন কোন ছোয়া লাগেনি। তবে ছোয়া লেগেছে দূর্ণীতি ও অভিযোগের পাহাড়গুলোতে। আর সে সকল পাহাড়গুলো ধ্বংস ও ঢেকে রাখার জন্য গৃহপালিত হিসেবে পুষতেন একদল নামধারী সাংবাদিক। যাদের কাজই ছিলো প্রচার-প্রচারণা করা৷
তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোলাম রাব্বানী এমপিকে বাদ দিয়ে নৌকার টিকিট হাতে তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল’র হাতে।
আফসোস ও রাগ ক্ষোভে অজ্ঞাত কারনে এলাকার বাইরে চলে যান সাবেক সাংসদ গোলাম রাব্বানী। শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন্দল, লবিং-গ্রুপিং ও ক্ষোভ অভিমান ভুলে নৌকা প্রতীককে জয়ী করতে এককাতারে সামিল হন সকল নেতাকর্মীরা।
নির্বাচনী মাঠে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠ পর্যায়ে দেখা গেলেও দেখা যায়নি সাবেক সাংসদ গোলাম রাব্বানীকে। তবুও নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ১৭ হাজার ভোট বেশি পেয়ে ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল জয় ছিনিয়ে নেন৷
কিন্তু গোলাম রাব্বানীর নিজ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরপর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তার ছোট ভাই মো. বেনাউল ইসলাম। তিনি বর্তমানেও ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছে। তাহলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি কেন হবে? এমনটাই প্রশ্ন দলটির নেতাকর্মীদের।
তবে সাবেক সাংসদ গোলাম রাব্বানীর অনুপস্থিতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে ও দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এবং জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নানান প্রশ্ন। এছাড়াও গুঞ্জন ছড়াচ্ছে তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সাবেক সাংসদ গোলাম রাব্বানীর সাথে। তবে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রিজভী আলম রানা তার নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। পোস্টটি হুবহুব তুলে ধরা হলো-
“৪৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ ১ আসনে সাবেক সাংসদ গোলাম রাব্বানী এম পি দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা এবং শান্তির প্রতিক নৌকার পক্ষে কোনদিনই ছিলেন না, যেটা তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমান করেছেন। নৌকা এবং প্রার্থী ডাক্তার শিমুল এর পক্ষে প্রচারনা না করাই কানসাট এর মত উন্নত ইউনিয়নে নৌকার ব্যবধান ৮ হাজার। তিনি প্রমান করে দিলেন তিনি যাহা ছিলেন পূর্বে বর্তমানেও তিনি তাহাই রয়েছেন।”
Leave a Reply